ঢাকাসোমবার , ৪ মার্চ ২০২৪
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঐতিহ্যবাহী ‘পলো বাওয়া’ উৎসবে মেতেছেন মাছ শিকারীরা

আজকের বিনোদন
মার্চ ৪, ২০২৪ ১২:০৪ অপরাহ্ণ । ১১৫ জন
Link Copied!
দৈনিক আজকের বিনোদন সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আশিকুর রহমান :-

নরসিংদীর রায়পুরায় ঐতিহ্যবাহী ‘পলো বাওয়া’ উৎসবে মেতেছেন মাছ শিকারীরা।
সোমবার (৪ মার্চ) উপজেলার পলাশতলী ইউনিয়নের খলিলাবাদ গ্রামে শতবর্ষী খলিলাবাদ বিলে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এ ‘পলো বাওয়া’ উৎসবে মাছ শিকার করছেন মাছ শিকারীরা।
খলিলাবাদ বিলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় বহু দূর দূরান্ত থেকে আসা সৌখিন মাছ শিকারীরা সকাল থেকে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মিনি ট্রাকযোগে বিলে এসে হাজির হন। পরে পলো নিয়ে মাছ শিকারীরা ঝাঁকে ঝাঁকে দল বেঁধে নামেন খলিলাবাদ বিলে। এ উৎসবে কিশোর থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব বয়োবৃদ্ধও রয়েছেন তাদের দলে। কয়েক শতাধিক মাছ শিকারী পানিতে নেমে পলো, মাছ রাখার থলে নিয়ে কচুরিপানা সড়িয়ে মাছ শিকার করতে দেখা যায়। তাদের এ মাছ ও উৎসবটি উপভোগ করতে সকাল থেকে নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর, কিশোরী বয়োবৃদ্ধ সবাই বিলের দু’পাড়ে উল্লাস করে আনন্দ উপভোগ করেন।
মাছ শিকারী ও স্থানীয়রা জানান, শত বছরের বেশি সময় ধরে চলা খলিলাবাদ বিলে
মাছ শিকারীরা পলো দিয়ে মাছ ধরে উৎসব চলে। প্রতি বছরই ফাল্গুন-চৈত্র মাসের কোন একদিনে এই উৎসব করে। উৎসবটিকে ঘীরে নরসিংদীসহ পার্শ্ববর্তী জেলার গাজীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, ময়মনসিংহ সহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ২ হাজারো অধিক শিকারী প্রতি বছর এ উৎসবে অংশ নেয়। তবে বিলে পানি ও মাছের ওপর ভিত্তি করে বছরে দুইবারও উৎসব হয়। আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও মানুষ এসে এখানে মাছ ধরেছেন। নরসিংদীসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার শখের মাছ শিকারিদের এক একনামে দল রয়েছে। সেই দলের প্রধানরা মিলে সিদ্ধান্ত নেন একেক সপ্তাহে একেক বিলে মাছ শিকার করবেন। সেই ঘোষণা গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা ছড়িয়ে দেয় পরিচিতদের কাছে। এভাবেই নির্দিষ্ট দিনে সকাল থেকে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মিনি ট্রাকযোগে হাজির হয়ে পলো উৎসবে মেতে উঠেন তাঁরা। মাছ শিকারীরা জানান, উৎসবের দিন সকালে নিজ নিজ পলো, হাতাজাল, উড়ালজাল ও লাঠিজালসহ নানা ধরণের মাছ ধরার জিনিসপত্র নিয়ে বিলের পাড়ে গিয়ে সমবেত হন হাজারো শিকারী। ঘড়ির কাটায় নির্ধারিত সময় বেজে ওঠলেই সবাই মিলে এক সঙ্গে পলো নিয়ে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। মাছ ধরে আনন্দ পাই। নিজ হাতে ধরা মাছ পরিবারের লোকজন নিয়ে মজা করে খাই।
গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে আসা সাগর কাজী, মোতালিব, আহাম্মেদ আলী নামে ষাটোর্ধ্ব এক মাছ শিকারি বলেন, ‘আমি এসেছি গাজীপুর থেকে। ১৭ বছর যাবত প্রতি বছর এখানে আসি। এবারও এসেছি। মাছ পাওয়া না পাওয়া বিষয় না। সবাই মিলে আনন্দ করছি, হৈ হুল্লোড় করছি এটাই অনেক মজা খুব আনন্দ।
গাজিপুরের কালীগঞ্জ থেকে আসা ৭৪ বছরের বৃদ্ধ আরমান সরকার মাছ শিকারি বলেন, ‘আমি একটি বড় বোয়ালসহ ছোট মাছ পেয়েছি। এতেই আমি খুশি। টাকা দিলেও এই মাছ আমি কিনতে পারবো না। এটা শখের জিনিস। আমি বাড়ি নিয়ে পরিবারকে নিয়ে মজা করে খাবো।
স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই এই বিলে উৎসবমুখর পরিবেশে পলো-বাওয়া উৎসব হয়। এই বিল সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাই এখানে সারা বছরই মাছ ধরতে পারে।