মো. মতিউর রহমান, সিলেটঃ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে ও মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় অবশেষে সচল হয়েছে সিলেট নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে লাগানো ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। মেয়রের আন্তরিকতায় ক্যামেরাগুলো সচল করা হয়েছে। নতুন ও পুরাতন সর্বমোট ৯০ সিসি ক্যামেরা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে। বর্তমানে নতুন সিসি ক্যামেরাগুলো আরো বেশি উন্নত মানের লাগানো হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কতৃক বাস্তবায়িত “ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের পুনঃ সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বেলা ১২ টার সময় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানার হলরুমে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান (পিপিএম) এর সভাপতিত্বে ও এসএমপি ট্রাফিক বিভাগের এডিসি রাখী রাণী দাসের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদরও প্রশাসন) মো. জুবায়েদুর রহমান (পিপিএম), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মুহাম্মদ মাসুদ রানা, উপ-পুলিশ কমিশনার প্রশাসন তোফায়েল আহমদ, উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত আজবাহার আলী শেখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই উদ্যোগ গ্রহন করি। বর্তমানে নগরীতে ৪৫ টি পয়েন্ট আছে, সবকয়টি পয়েন্টই সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত। সিসি ক্যামেরার পুলিশের মনিটরিং সেল থেকে পুরো সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ স্থান পর্যবেক্ষণ করা হবে। কোন অপরাধ সংগঠিত হলে সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিতে পারবে। নগরীতে কোন যানজট সৃষ্টি হলে দ্রুত ট্রাফিক বিভাগ সমাধান করতে পারবে। আমি মনেকরি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বর্তমানে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। পর্যায় ক্রমে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৪২ টি ওয়ার্ডকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। তবে সিলেট এয়ারপোর্ট রোড, শাহপরান (রঃ) মাজার রোড, আখালিয়া টুকের বাজার রোড খুব দ্রুত সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে এসএমপি কমিশনার গণমাধ্যমকে জানান, ক্যামেরাগুলো সচল হওয়ার ফলে এখন থেকে নগরীতে অপরাধ কমে আসবে। ক্যামেরার আওতাভুক্ত এলাকায় কোনো অঘটন ঘটলে ফুটেজ দেখে জড়িতদের সহজেই শনাক্ত করা যাবে। অপরাধ কর্মকান্ডের পর অপরাধীর অবস্থানও শনাক্ত সম্ভব হবে। এ ছাড়া নগরের যানজটের অবস্থাও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখা যাবে। কোথাও যানজট বেশি হলে মনিটরিং রুম থেকে তাৎক্ষণিক পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে অবগত করা হবে। ১১০টি ক্যামেরার মধ্যে কয়েকটি ‘ফেস রিকগনিশন’ ক্যামেরা রয়েছে। এগুলোতে চিহ্নিত অপরাধীদের ছবি কিংবা যানবাহনের নম্বর ইনপুট করে রাখলে ক্যামেরাগুলো ওই ব্যক্তি ও যানবাহনকে সহজে শনাক্ত করতে পারবে এবং সতর্কতামূলক সংকেত দেবে। এতে পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারবে। সিসি ক্যামেরা গুলো সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানা থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
জানা যায়, ডিজিটাল সিটি কর্পোরেশন গঠনের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালে সিলেট নগরীর ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ১১০ টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। এর মধ্যে ছিলো ১০টি ‘ফেস রিকগনিশন’ ক্যামেরা। ক্যামেরাগুলো বসানোর পর অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে ধীরে ধীরে অধিকাংশ ক্যামেরা বিকল হয়ে পড়ে। বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দায়িত্ব নেওয়ার পর এসএমপির পক্ষ থেকে ফের একই অনুরোধ জানানো হয়। বিষয়টি জানার পর নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মেরামতের মাধ্যমে ক্যামেরাগুলো সচল করার উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন।









