ঢাকারবিবার , ২৫ মে ২০২৫
Tanim Cargo
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অসংখ্য নারী ও শিশুর জীবন বিপন্ন

আজকের বিনোদন
মে ২৫, ২০২৫ ১:৪৮ অপরাহ্ণ । ৫ জন
Link Copied!
দৈনিক আজকের বিনোদন সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিমাসেই ভারত থেকে ফিরছেন বহু নারী ও শিশু, যারা পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে সীমান্ত পেরিয়েছিলেন। পাচারকারীরা চাকরি, বিয়ে কিংবা বিদেশে পাঠানোর প্রলোভনে অসংখ্য নারী ও শিশুকে নিয়ে যায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। সেখান থেকে উদ্ধার হয়ে দেশে ফেরত আসছেন অনেকে। তবে ফেরার পথ যেমন কঠিন, তেমনি তাদের পুনর্বাসনও চ্যালেঞ্জের। পরিবারের কাছে ফেরত গেলেও সামাজিক ভাবে পোহাতে হয় নানা ধকল। অন্যদিকে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় পাচারকারীরা।
সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফেরত এসেছে ২১ জন কিশোর-কিশোরী। তাদের মধ্যে ১০ জনকে আশ্রয় দিয়েছে ‘রাইটস যশোর’ এবং বাকিদের পুনর্বাসনে সহায়তা করছে ‘জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার’। সামাজিক সংগঠনগুলোর হিসাব অনুযায়ী, গত এক দশকে ২,০০০-এর বেশি নারী ও শিশুকে ফেরত আনা হয়েছে ভারত থেকে।
নড়াইলের সীমা খাতুন (ছদ্মনাম) জানান, “কোলকাতায় গার্মেন্টসে চাকরির কথা বলে এক আত্মীয় আমাকে নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি, আমাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। দেড় বছর ধরে বন্দি ছিলাম।”
সংগঠনগুলোর তথ্যমতে, দালালরা প্রতিজনের কাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা নেয় অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করাতে। পরে পাচার হওয়া মানুষদের ২ থেকে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয় ভারতের বিভিন্ন দালালচক্রের কাছে। সবচেয়ে বেশি পাচার হয় যশোরের পুটখালী, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, রুদ্রপুর, চৌগাছা ও সাতক্ষীরার সীমান্তপথ দিয়ে।
‘রাইটস যশোর’-এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, “মানবপাচার এখনো সীমান্ত এলাকায় বড় সমস্যা। তবে বর্তমান সময়ে সীমান্ত দিয়ে পাচার তুলনামূলক অনেক কম। আমরা নিয়মিত পাচার হওয়া মানুষদের ফেরত আনার পাশাপাশি আইনি সহায়তা, কাউন্সেলিং এবং পুনর্বাসনের কাজ করে যাচ্ছি।” তিনিও আরো জানান দেশে ফেরত আসা নারী পুরুষ পাচারকারীদের নামে অভিযোগ করলেও তারা প্রশাসনিক তেমন কোন সহায়তা পাননা। তারই একটা উদাহরণ ঝিকরগাছার জাহানারা এবং পলি।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, পাচারের মূল কারণ দারিদ্র্য, অশিক্ষা, এবং সচেতনতার অভাব। সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির ঘাটতি এবং দালালদের প্রভাবও পাচার রোধে বড় বাধা হয়ে আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাচারকারীরা অনেক সময় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থাকে। ফলে অভিযোগ করেও সঠিক বিচার পাওয়া যায় না। এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাচার রোধে শুধু উদ্ধার নয়, বরং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা এবং দালালদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।

Tanim Cargo
Tanim Cargo